রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স মনিটরিং সিস্টেম’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে এই পদ্ধতি নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নেতারা ভিসির সাথে দেখা করে শিক্ষকদের অসন্তোষের কথা জানান।
জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট তারিখে ৪৬৭তম সিন্ডিকেটের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর আগামী ১ অক্টোবর থেকে ‘ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স মনিটরিং সিস্টেম’ মাধ্যমে হাজিরা প্রাদান করতে হবে এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকের হাজিরার রেকর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। প্রতিটি বিভাগের কার্যালয়ে একটি করে মনিটিরিং ডিভাইস বসানো হয়েছে। এই ডিভাইসে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্মার্টকার্ড পাঞ্চ করতে হবে। প্রতিটি ডিভাইসের সঙ্গে একটি করে ক্যামেরা লাগানো আছে। কার্ড পাঞ্চ করার সময় এই ক্যামেরায় কার্ড বহনকারীর স্থিরচিত্র উঠবে।
এদিকে এই সিদ্ধান্তের পর থেকে অধিকাংশ শিক্ষককের মধ্য অসন্তোষ দেখা দেয়। তাদের মতে, এতে শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে, যা তাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করবে। বিষয়টি নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে গত সোমবার সন্ধ্যায় মিটিংয়ে বসে শিক্ষক সমিতি। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মো. শহীদুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর শাহ্ আজম শান্তনুর নেতৃত্বে সমিতির নেতৃবৃন্দ বিশ^বিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিনের সাথে দেখা করে। এসময় তার ডিজিটাল উপস্থিতির বিষয়ে শিক্ষকদের অভিমতগুলো তুলে ধরেন এবং এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।
জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আজম শান্তনু বলেন, ‘১৯৭৩ এর আইন অনুযায়ী শিক্ষকেরা বিবেকের কাছে দায়ী থাকবেন। কিন্তু এই পদ্ধতি এ্যাক্টের উপর একধরনের হস্তক্ষেপ এবং শিক্ষকদের অমর্যাদাকার অবস্থায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টির জায়গা, আর জ্ঞান সৃষ্টি কখনো বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সম্ভব না।’
এব্যাপারে বিশ্¦বিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষকেরা হয়তো ভাবছেন এই পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবার মান বৃদ্ধি করা, দক্ষতা বৃদ্ধি করা। সেই সঙ্গে কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিয়ে আসা।’
Leave a Reply